ষোলশহর ক্লাসরুম: স্বপ্ন পূরণের প্রথম পদক্ষেপ,২০১৭





"ক্যাম্পাসের আঙিনায় একটা শিশু পত্রিকা বিক্রি করছে কিংবা টাকার জন্য হাত পাতছে!"
বিষয়টি বেশ ভাবায়!!
তাদের জন্য কিছু করা দরকার!!
সে ভাবনা থেকেই "এক টাকায় শিক্ষার" আবির্ভাব।

ছিন্নমূল পথশিশুদের নিয়েই আমাদের পথচলার সূচনা। পথশিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে আমরা ষোলশহর রেলস্টেশন সংলগ্ন একটা ঘর ভাড়া করি। এই রুমের ভাড়া ছিল দৈনিক ১০০ টাকা।

ষোলশহর কেন্দ্রিক বিভিন্ন বস্তি ও ছিন্নমূল বসতি ঘুরে ঘুরে ১২-১৫ জন পথশিশু একত্র করি এবং তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে শিশুদের শিক্ষাগ্রহণে প্রস্তুত করি। সপ্তাহে ২/৩ দিন আমাদের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের ক্লাস নিতে শুরু করে। কাউকেবা বস্তিতে গিয়েই পড়িয়ে আসতো। অনেকের পরিবারে পথশিশুটিই একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ায় পরিবারের অন্য সদস্যকে কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছি যেন পথশিশুটি শেখায় সময় ব্যয় করতে পারে। কয়েকজনকে আমরা স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও প্রতিটি ক্লাস শেষে তাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করা হতো যেন তারা সানন্দে পড়তে আসে। এক টাকায় শিক্ষা'র সদস্যদের থেকে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে ব্যাগ,বই,খাতা,কলম ইত্যাদি শিক্ষা সামগ্রী কিনে দেওয়া হয়। শিক্ষা উপকরণ পেয়ে এসব সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের অমলিন হাসি আমাদের আনন্দিত করতো।

২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ষোলশহর রেল স্টেশনের এই রুমে পড়তে আসা সুমাইয়া, মনিষা, বর্ষা, আরমান, সুমন, ফয়সাল-কে রেল স্টেশনের পাশের স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়।

এভাবেই চলল প্রায় এক বছর। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে তাদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেষ্টা করেছি তবে তাদের বেসশিরভাগেরই আগ্রহ ছিল হতাশাজনক। ষোলশহর রেল স্টেশনের পাশের সেই ক্লাসরুমের মালিক এক টাকায় শিক্ষা'র সাথে বনিবনা না হওয়ায় ঝামেলা বাধাঁনোর চেষ্টা করে।২০১৮ সালের শেষদিকে এই রুমে পড়ানোর জন্য এক টাকায় শিক্ষা'র শত চেষ্টা সত্ত্বেও রুম ছাড়তে বাধ্য করা হয়।

তাই আমরা আমাদের সহযোগিতার ধারণাকে বিস্তৃত আকারে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই এবং দেশের যেকোন প্রান্তে আগ্রহী শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা সহায়তা করে যাচ্ছি।
এভাবেই দেশের আনাচে-কানাচে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আমাদের অবিরত প্রচেষ্টা চলমান…